আপনি কি জানেন ত্রিফলা শব্দের মানে,,,? বাক্য সংকোচনের ভাষায় বলা হয়, তিন ফলের সমাহার=ত্রিফলা। আসলেই তাই। চলুন মিলিয়ে দেখে নেওয়া যাক।

নিরাময়ী ত্রিফলা চূর্ণ

ভারতীয় আয়ুর্বেদে প্রাচীনকাল থেকে ব্যবহার করা হচ্ছে ত্রিফলা। এটা হল ‘তিনটি ফলের মিশ্রণ’। ত্রিফলা আয়ুর্বেদিক ঔষুধের প্রধান একটি উপাদান। ত্রিফলায় তিনটি ফল থাকে,আর সেগুলো হলো আমলকি, হরিতকি এবং বহেরা। আর এই তিনটি ফলের প্রায় প্রতিটিই মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় যথেষ্ঠ অবদান রেখে যাচ্ছে। আয়ুর্বেদ মতে, ত্রিফলা চূর্ণ খেলে কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিস এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। তবে ত্রিফলা চূর্ণ খাওয়ার সময় সতর্কতা অবলম্বন না করলে এর থেকে বেশকিছু ক্ষতিও হতে পারে। চলুন জেনে নেওয়া যাক নিরাময়ী ত্রিফলা চূর্ণের গুরুত্বপূর্ন কিছূ উপকারীতা ও ক্ষতিকর দিকসমূহ:

নিরাময়ী ত্রিফলা চূর্ণের উপকারীতা:

• ত্রিফলা হল অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের একটি সমৃদ্ধ উৎস যা দূষণের কারণে হওয়া চুলের ক্ষতি কমাতে সহায়তা করে।
• ক্লিনিক্যাল গবেষনা প্রমান করে,ছানিবিরাধী ও দৃষ্টিশক্তির উন্নতি সাধনে নিরাময়ী ত্রিফলা চূর্ণ যথেষ্ট ভূমিকা পালন করে।
• নিরাময়ী ত্রিফলা চূর্ণ চুল পড়ার সমস্যা কমায় এবং পরিমিত ব্যবহারে খুলিতে আকাঙ্ক্ষিত পুষ্টি প্রদান করে।
• খাদ্যাভাসের মধ্যে নিরাময়ী ত্রিফলা চূর্ণ অন্থর্ভূক্ত করলে পেটে ফাঁপাভাব,কোষ্ঠকাঠিন্য,পেট ফুলে যাওয়া এবং অনিয়ন্ত্রিত অন্ত্রের সমস্যাসহ পাচনতন্ত্রের সাধারন সমস্যাসমূহ সামাল দেওয়া যায়।
• জীবানু বিরোধী কার্যকলাপের জন্য নিরাময়ী ত্রিফলা চূর্ণ মাড়ির সমস্যা,পিরিওদন্তাইটিস ও অন্যান্য মৌখিক সমস্যার বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

নিরাময়ী ত্রিফলা চূর্ণ

• নিরাময়ী ত্রিফলা চূর্ণ বিভিন্ন চিকিৎসায় সংক্রমন আটকানোর প্রতিনিথি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
• নিরাময়ী ত্রিফলা চূর্ণ আমাদের শরীরকে ফ্রি র‌্যাডিক্যালের প্রভাব থেকে রক্ষা করে।
• ইনসুলিন হরমোনের ওপর ক্রিয়ার ফলে নিরাময়ী ত্রিফলা চূর্ণ ডায়াবেটিস বিরোধী্
• নিরাময়ী ত্রিফলা চূর্ণ রক্তস্রোতে গ্লুকোজ জমা হওয়া বা বিমুক্ত হওয়া নিয়ন্ত্রন করে থাকে।
• এন্টিঅক্সিড্যান্ট,প্রদাহবিরোধী প্রভাবের কারনে দাঁতের সাধারন সমস্যা দূরীকরনে ও দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে নিরাময়ী ত্রিফলা চূর্ণ দুর্দান্ত প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করে।

নিরাময়ী ত্রিফলা চূর্ণের প্রতিক্রিয়া :

• নিরাময়ী ত্রিফলা চূর্ণের অপরিমিত সেবন করলে তা ডায়রিয়া ও ডিসেন্ট্রির আকার ধারন করে।
• আপনি যদি নির্ধারিত ঔষুধ সেবন করে থাকেন,তাহলে নিরাময়ী ত্রিফলা চূর্ণ খাদ্যাভাসে যোগ করার পূর্বে অবশ্যই একজন আয়ুর্বেদিক ডাক্তারের শরনাপন্ন হয়ে নিবেন। কারন এটি অন্যান্য ঔষুধের ওপর হস্তক্ষেপ করতে পারে।
• নিরাময়ী ত্রিফলা চূর্ণ সেবন যে গর্ভবতী ও শিশু প্রতিপালনকারী মায়েদের জন্য নিরাপদ,তার কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমান নেই। তাই  গর্ভবতী ও শিশু প্রতিপালনকারী মায়েদের সেবনের জন্য অবশ্যই একজন আয়ুর্বেদিক ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।
• বাচ্ছাদের  নিরাময়ী ত্রিফলা চূর্ণ সেবন থেকে বিরত রাখুন কিংবা উচিতই নয়।

ত্রিফলা কী ভাবে ব্যবহার করবেন:

* সাধারণত নিরাময়ী ত্রিফলা চূর্ণেরন কোন আদর্শ ডোজ নেই। পাউডার, জুস, ক্যাপসুল, ট্যাবলেট ছাড়াও এটি আরও অনেক রূপে পাওয়া যায়। আপনি সমস্যা অনুযায়ী ত্রিফলা এই ফর্মগুলির যেকোনো একটিতে ব্যবহার করতে পারেন।

* প্রতি রাতে এক গ্লাস পানিতে এক চা চামচ নিরাময়ী ত্রিফলা চূর্ণ ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে পানিটা খেয়ে নেয়া যেতে পারে। নিরাময়ী ত্রিফলা চূর্ণ ফোটানো পানি যদি খেতে পারেন বা প্রত্যেকদিন সকালে ১ চামচ নিরাময়ী ত্রিফলা চূর্ণ এক গ্লাস গরম পানিতে মিশিয়ে খান, তাহলে এক মাসের মধ্যেই ওজন কমাতে পারবেন। এছাড়া নিরাময়ী ত্রিফলা চূর্ণের মিশ্রিত পানি ছেঁকে নিয়ে এর সঙ্গে এক চামচ মধু মিশিয়ে যদি খান,তবে ঔষুধের মতো ফল পাবেন।